গুড়ের বাহারি রেসিপি - গীতশ্রী ঘোষাল


খাওয়াদাওয়ার দিক থেকে শীতকাল সকলের কাছে একটু বেশিই প্রিয়। রকমারি সবজি দিয়ে তৈরী নানান পদ ভুরিভোজ জমিয়ে দেয়। আহার শেষে দু'টো একটা মিষ্টি থাকলে তো আর কথাই নেই! কিন্তু মিষ্টিজাতীয় খাবারে ওবেসিটি, টাইপ টু ডায়াবিটিস, মধুমেহ ইত্যাদি নানাপ্রকার রোগের সম্ভাবনা থাকে। সেদিক থেকে গুড় তুলনামূলকভাবে বেশি স্বাস্থ্যকর। বিশেষজ্ঞদের মতে, মিষ্টিজাতীয় খাবারে চিনির পরিবর্তে গুড় ব্যবহার করলে তা স্বাস্থ্যকর হওয়ার সাথে সাথে রসনাতৃপ্তিও ঘটাবে। চিনির মতোই গুড় মিষ্টি খেতে হলেও চিনির থেকে গুড়ের স্বাদ ও গুণ অনেকটাই আলাদা। গুড় অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্যে পরিপূর্ণ হওয়ার কারণে চিনির তুলনায় এতে স্বাস্থ্যগুণ বেশি থাকে। বিভিন্ন মরশুমি সংক্রমণ যেমন ফ্লু, সর্দি, কাশির মতো সমস্যাগুলির সঙ্গে মোকাবিলা করতে এটি সাহায্য করে। রঙ, সুগন্ধ, স্বাদ ও গুণের কারণে বর্তমানে সাদা চিনির পরিবর্তে গুড়ের ব্যবহার বহু ক্ষেত্রে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই প্রসঙ্গে দেখে নেওয়া যাক গুড়ের তৈরী চারটি অতি সুস্বাদু রেসিপি।


মালাই পুলি :


উপকরণ :

গুঁড়ো দুধ - ১ কাপ
বেকিং পাউডার - ১ চা চামচ
তরল দুধ - ১ লিটার
ঘন দুধ - ১ কাপ
ময়দা - ২ টেবিল চামচ
চিনি - পৌনে এক কাপ
ঘি - ২ টেবিল চামচ
খেজুরের গুড় - আধ কাপ
ডিম - ১টি

প্রণালী :

আধ কাপ চিনি দিয়ে তরল দুধ জ্বাল দিতে হবে যাতে ঘন হয়ে পরিমাণে ১ কাপ হয়। গুঁড়ো দুধ, বেকিং পাউডার, ময়দা ও ঘি দিয়ে ময়ান করে ডিম দিয়ে ডো বানিয়ে কয়েক ভাগ করে গোল গোল মিষ্টি বলের মতো বানিয়ে নিতে হবে। গুড়কে তরল করার পর গ্যাসে ঘন দুধ ও তরল গুড়ের মিশ্রণে মিষ্টি বলগুলি ছেড়ে ১৫ মিনিট চাপা দিয়ে জ্বাল দিতে হবে। মিষ্টি সেদ্ধ হয়ে গেলে নামিয়ে ঠান্ডা হওয়ার পর পরিবেশন করতে হবে।


গুড়ের পরোটা :

উপকরণ :

আটা - ২ কাপ
গুড় - ১ বাটি 
তিলের বীজ - ৩ টেবিল চামচ
বেসন - ৩ চা চামচ
তেল - পরিমাণ মতো

প্রণালী :

প্রথমে একটি প্যানে তেল ঢেলে অল্প আঁচে তিল হালকা করে ভেজে নিয়ে মিক্সারে দিয়ে মোটা করে পিষে ফেলতে হবে। তিলের গুঁড়ো বানানোর পর বেসনও ভাজতে হবে। প্যানে আধ চামচ তেল ঢেলে বেসন যোগ করে অল্প আঁচে নাড়তে হবে এবং হালকা সোনালি হয়ে এলে গ্যাস বন্ধ করে দিতে হবে। এবার গুড় ছোট ছোট টুকরো করে নেওয়ার পর একটি পাত্রে ভাজা বেসন, তিল ও গুড় ভাল করে মিশিয়ে পুর বানাতে হবে। একটি পাত্রে আটা নিয়ে তাতে সামান্য জল ও এক চিমটি নুন মেশাতে হবে এবং ধীরে ধীরে জল যোগ করে নরম করতে হবে। তারপর একটি কাপড় দিয়ে ১০ মিনিটের জন্য চাপা দিয়ে রাখতে হবে। ১০ মিনিট পর ময়দার ছোট একটি লেচি বানিয়ে সেটি সামান্য বেলে তার উপর গুড়ের পুর রেখে লেচিকে পুনরায় গোল করে নিয়ে হালকা হাতে বেলে ফেলতে হবে। এবার একটি গরম তাওয়াতে কম আঁচে ভেজে নিতে হবে। দুই দিক থেকে সোনালি হয়ে এলে নামিয়ে গরম গরম পরিবেশন করতে হবে।


মশলাদার গুড়ের চা :


উপকরণ :

দুধ - ২ কাপ
জল - আধ কাপ
এলাচ - ১টি
দারচিনি - ছোট ১ টুকরো
লবঙ্গ - ২টি
গলানো গুড় - আধ কাপ
চা পাতা - দেড় চা চামচ

প্রণালী :

একটি পাত্রে দুধ, জল, এলাচ, দারচিনি ও লবঙ্গ মিশিয়ে জ্বাল দিতে হবে। এটি ঘন হয়ে এলে চা পাতা দিয়ে নাড়তে হবে। চায়ের রঙ এসে ঘন হলে গুড় দিয়ে নেড়ে ছেঁকে নিতে হবে। গরম গুড়ের চা অতি উপাদেয়।


গুড়ের সন্দেশ :



উপকরণ:

ছানা - ১ কাপ
খেজুর গুড় - আধ কাপ
গুঁড়ো দুধ - ১ কাপ
এলাচগুঁড়ো - ১ চা চামচ
ঘি - ২ টেবিল চামচ

প্রণালী :
 
একটি প্যানে ঘি দিয়ে গরম হওয়ার পর তাতে গুড় দিয়ে গলিয়ে নিতে হবে। এরপর তাতে যোগ করতে হবে ছানা ও এলাচগুঁড়ো এবং অনবরত নেড়ে যেতে হবে। ঘন হয়ে এলে গুঁড়ো দুধ যোগ করে পুনরায় ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। প্যানের গা থেকে মিশ্রণটি আলগা হয়ে এলে নামিয়ে পছন্দমতো ডিজাইন করে নিতে হবে। গুড়ের সন্দেশ তৈরী।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন