শিক্ষা নিয়ে কথা হচ্ছিল। মন্টুর চা দোকানে। এই চা দোকানগুলোকে বাঙালির মিনি নালন্দা
বলে মনে হয়। সব বিষয়ে তুমুল জ্ঞানচর্চা চলে
এবং বেশ চাঁচাছোলাভাবে রাজনীতি থেকে প্রেম প্রীতি, মূদ্রাস্ফীতি থেকে পল্লীগীতি ভায়া দুর্নীতি টু হাওয়াই চটি
- সমস্ত নীতির পিন্ডি চটকে বাঙালীর সকালবেলাটা শেষ হয়।
সন্ধ্যাবেলাটা
আবার অন্যরকম। ধান্দাবাজি থেকে শুরু করে গলাবাজি, দলবাজি, মামদোবাজি এবং শেষমেষ
বৌদিবাজি। তারপর রাত নামে।
তো আজ
শিক্ষা নিয়ে তর্ক শুরু হল।
প্রবোধ বাবু বললেন - তখন বিদ্যালয়গুলি ছিল ভাঙাচোরা, খড়ের চাল, মাটির দেওয়াল। জানলা দরজার তো বালাই-ই ছিল না। কোথাও আবার খোলা মাঠে, গাছের তলায় পড়াশুনা হত। তবু তার মূল্য ছিল। মাস্টার মশাইরা ছিলেন আদর্শবান ন্যায় পুরুষ। অগাধ পান্ডিত্যের আকর, দেখলে মাথা নিচু হয়ে আসত। আর এখন? কি বড় বড় বিল্ডিং, কতো কতো স্যার ম্যাডাম, কাঁড়ি কাঁড়ি রঙচঙে বইপত্তর। কিন্তু শিক্ষা কই? আসল শিক্ষাটাই নেই।
বাচ্চু ফোড়ন কাটলো - কিন্তু ডিম আছে, মিড ডে মিল আছে, আয়রন ট্যাবলেট আছে।
বাচ্চু বললো
- তা না হয় মানছি মাস্টার। তবে আমার একটা
সন্দেহ আছে।
- কি সন্দেহ বলো ?
- না, তখন যদি আসল শিক্ষা হবে কিংবা আদর্শ মানুষ তৈরীর শিক্ষা হবে, তাহলে এই সব মালগুলো কোত্থেকে এলো?
- মানে?
- মানে, বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার রথী মহারথীগুলো; যাঁরা গোটা শিক্ষা দপ্তরটাকে নিয়ে জেল অলংকৃত করছেন! এঁরা তো সেই সময়কার সেরা প্রোডাক্ট! না কি ভুল বললাম?
প্রবোধবাবু
দেখি, আমতা আমতা
করছেন।
মন্টু বলে
ওঠে - দেখুন, ওসব
শিক্ষা-ফিক্ষা ভিতরের ব্যাপার, ঘরের জিনিস। এই আমি চায়ে কতটা দুধ মেশাব বা কতটা জল, মাস্টারে এসব শেখাবে? না ইস্কুলে শেখাবে?
প্রবোধ বাবু
এবার বলে ওঠেন – বুঝলাম। আসল শিক্ষা হলো এটাই যে এক মিসকলে কেটে পড়তে হবে। আর এটি বাড়ি থেকেই আসে |
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন