ফ্ল্যাটের কলবেল বাজাল মৌলী। অপেক্ষা, সাড়াশব্দ নেই। এক দুই তিনবার। বিরক্ত হয়ে কল করল রূপকে। ফোনটাও বন্ধ, আশ্চর্য! ভেতরে রূপ কী নিয়ে ব্যস্ত! বাইরে লালরঙের লেডিজ চপ্পল নজরে পড়ল। তবে কী কেউ এল! মাথাটা দপ করে উঠল মৌলীর। তার হঠাৎ ফিরে আসাতে কী অপ্রস্তুতে রূপ? কী এমন ঘটছে ভেতরে যে দরজা খোলা যাচ্ছে না। অস্থির, মাথাটা গরম হচ্ছে, কৌতূহলও। আবার মৌলী কলবেলে চাপ দিল। নাহ্! ভেতরে রূপ আছে তো?
দুপুরেই অফিস ফেরত মৌলীর টেনশন শুরু হল এবার। কিছু ঘটল না তো! রূপ তো এরকম করে না! ঘরে থাকলে তো দরজা লক করেই না। কত
ঝগড়া এই জন্য। লক নেই, দরজা ঠেলে সবাই ঢুকে পড়ছে।
না কলবেল, না নক। ধীরে ধীরে ধাতস্থ হয়েছে রূপ। আজ কী হল, সাড়াশব্দ নেই। লাল জুতোটা স্টাইলিশ, নতুন, পাঁচ নাম্বার, কার তবে! এন্ট্রির পাশে রাখা অ্যান্থুরিয়াম গাছটার নিচে। মাথাটা ঘুরছে, এবার দরজায় সজোরে ধাক্কা
দিল মৌলী। উল্টো
ফ্ল্যাটের নন্দী কাকিমা দরজা খুলে অবাক।
- কী ব্যাপার মৌলী, রূপ নেই নাকি?
- বুঝতে পারছি না কাকিমা। বেল বাজালাম, ফোনটাও বন্ধ। বিরক্ত লাগছে।
- ছেলেটা তো এমন না। বাইরে গেলে আমাকে চাবি দিয়ে যায়, তোমাকেও তো ফোনে বলে! কী হল ছেলেটার!
- আচ্ছা কাকিমা! রূপ দিনে ঘরেই থাকে? আমার অবর্তমানে কেউ ফ্ল্যাটে আসে? নজরে পড়েছে কিছু?
নন্দীকাকিমা কিছু বলার আগেই
লিফট থেকে রূপ বেরিয়ে এল। রেগে, বড় চোখে তাকাল মৌলি। মেনডোর
খুলছে রূপ। মৌলী চিৎকার করল - ফোনটা বন্ধ কেন? লাল জুতোজোড়া কার?
অবাক রূপ বলল - ফোনটা ঘরে চার্জে বসিয়ে নিচে গেছিলাম।
-- আর জুতো জোড়া… ?
নন্দীকাকিমা হেসে মৌলীর হাতটা ধরে বললেন - মৌলী, আমার কাজের মেয়েটা ভুল করে তোমাদের দিকে জুতো খুলেছে, কিন্তু তোমার সন্দেহটা ভাল।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন