কাচ নামানো কালো গাড়ি থেকে
দু'টো ভিজে চায়ের ভাঁড়
ডাস্টবিনে উড়ে আসে
প্রথমে একটা, তারপর আরো একটা
বাঁ হাতের নমনীয় কব্জির মোচড়ে হওয়া
নিপুণ লক্ষ্যপূরণের এই দৃশ্য দেখে
খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে
অপর জানালার পাশে বসা মেয়েটি।
মুগ্ধ দৃষ্টিতে একবার সে
গন্তব্যের ডাস্টবিন দেখে
পরমুহূর্তে দৃষ্টি নেমে আসে
পুরুষসঙ্গীর সুঠাম বাঁ হাতের বাইসেপে
অথচ কিছু আগে তারা একসাথে রাজবাড়ি দেখেছে
দেখেছে পাঁচশত বছরের পুরোনো যুদ্ধের প্রান্তর
দেখেছে পাথর বাঁধানো সমাধিক্ষেত্র, গম্বুজ,
পটচিত্রের মিলনান্ত কাহিনী।
সামনের নদীতে আকস্মিক এক জাহাজ ভেসে গেলে
দৃষ্টি থেকে হারিয়ে যাওয়ার আগে
শুনেছে তার ভোঁও
সেই সময় এক অতর্কিত হাওয়ায়
হলুদ ওড়না বেসামাল হয়ে উড়তে চেয়েছিল আকাশে
আর খিলখিল হাসি মিশে গিয়েছিল
জলজ অনুরণনে।
ওড়না সামলে, যুদ্ধের অবিন্যস্ত ইতিহাস বোঝার সময়
স্যাঁতস্যাঁতে এক ঘরের চৌকাঠ পেরোতে চেয়ে
নখ ঠুকে নীল ব্যথা পাওয়ার সময়
অনামিকায় আঙটির ছাপ মুছে
অসম্ভব গাঢ় আশা আড়াল করার সময়
প্রত্যেকবার, প্রত্যেকবার মেয়েটি
ভালোবাসার সহজ হাত রেখেছিল
সুগঠিত, দক্ষ বাইসেপে।
একসময়, এই একদিনের বেড়ানো শেষ হয়ে যায়
কাচ তুলে কালো গাড়ি ফিরে চলে
বিচ্ছিন্ন দিগন্তের দিকে
অথচ সেই বাইসেপ
জড়িয়ে থাকা আঙুলগুলোকে
জানিয়ে দেয়নি তখনো
সুগন্ধী চা খেয়ে
ডাস্টবিনে ছুড়ে ভাঁড় ভেঙে ফেলায়,
খেলায়, ঠিক কতটা কৃতী সে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন