বাজার থেকে ফিরে অবিনাশ ডাকল, “সম্পা, বাজারগুলো একটু গুছিয়ে রেখে দাও।”
সম্পা অবাক।“এত শাকসবজি এনেছ কেন? খাব তো দুটো মানুষ। ইন্দ্রানী
এসব ছুঁয়েও দেখে না।”
“বাজারে আজ সবজি দারুণ সস্তা।
প্রচুর আমদানি। বিক্রেতারা কেনার জন্য সাধাসাধি করছিল কিনা, তাই।”
“সস্তা বলে যত খুশি নিয়ে আসবে?”
“ঢেড়স, পটল, শশা সব আট টাকা কেজি পেয়েছি।
ওরা বলছিল পনেরো, নয় নয় দশ করে অন্তত দিতে। আমি
দিই নি। দেব কেন? এখনও প্রচুর সবজি পড়ে আছে। সব
বিক্রি হবে কি-না সন্দেহ। ফলে আট থেকে আমি একটি পয়সাও উঠি নি। শেষে তাতেই দিয়ে
দিল।”
“ওরা কিছু বলে নি?”
“বলে নি আবার। বলছে, এত কষ্ট করে চাষ করে বাজারে বয়ে
এনে আট টাকা দরে বিক্রি করে খুব লোকসানে পড়ে যাবে। আমি পাত্তা দিই নি।”
কয়েকটা ওষুধ কেনার কথা ছিল অবিনাশের। বাজারে গিয়ে তখন
ওষুধের দোকান খোলা পায় নি। ব্রেকফাষ্ট সেরে আবার বাজারে গেল ওষুধ ক’টা কিনতে।
ফিরেই মুখ গম্ভীর। “বুঝলে সম্পা, সব
ওষুধের দাম বেড়ে গেছে। একশো ছাব্বিশ টাকার ওষুধের দাম হয়েছে একশো বাষট্টি টাকা। আর
বাহান্ন টাকার ওষুধ আজ ঊনসত্তর টাকা।”
“সেকি গো, তোমার তো প্রতিমাসে অনেক টাকার
ওষুধ লাগে।”
“হুম, ওষুধেই
বাড়তি অনেক টাকা বেরিয়ে যাবে। তাছাড়া বাজারে শুনলাম, গ্যাস
সিলিন্ডারের দাম আজ আবার একশো পাঁচ টাকা করে বাড়ছে।”
“অ্যাঁ! কি বলছ তুমি? এই তো দু’মাস আগে পঞ্চাশ টাকা
বেড়েছিল।”
“হ্যাঁ, আবার
বেড়েছে। এবার কাঠ না হলে কয়লায় রান্না করতে হবে দেখছি।”
“একটু আগে গরীব চাষিকে চাপ দিয়ে
কেজিতে দু-পাঁচ টাকা বাঁচিয়ে খুব খুশি হয়েছিলে। আর এখন তো মুখ শুকিয়ে আমসি।”
অবিনাশ চুপ। তার মাথায় অন্য প্রশ্ন, কী চলছে এসব !
নির্মম বাস্তব ফুটে উঠেছে লেখায়...
উত্তরমুছুনএকটি মন্তব্য পোস্ট করুন