তুমি আমার কবিতা হবে?
আঁধার-রাতে অগোচরে খসে পড়া,
ময়ূর-পালকের ডগায় অরুণ-রাঙা
শিশির বুলিয়ে রোজ সকালে ঘুম ভাঙাব তোমার।
ডাহুক-ডাকা গ্রীষ্মের দুপুরে তুমি হবে শীতলপাটি,
কিংবা স্ফটিক-স্বচ্ছ শান্ত দীঘি যার ফাট-ধরা,
শ্যাওলা-মলিন ঘাটের ধাপে, পাকুড় ছায়ায় বসে পড়ব
পলাশতলির গীতিকাব্য। অথবা পানকৌড়ির মতো
ডুব দিয়ে খুঁজতে যাব অতল গভীরে
গোপন কুলুঙ্গিতে রাখা অজানা কোনো
মহাকাব্যের পাণ্ডুলিপি।
বর্ষাদিনে তুমি হবে মাটির সোঁদা গন্ধ-মাখা,
কচি পেলব ঘাসে ঢাকা দিগন্ত ছোঁওয়া সবুজ মাঠ।
অঝোর ধারায় স্নাত হয়ে ঘন নীল আঁচল বিছিয়ে
শুয়ে থাকব মখমলি সেই ঘাসের কোলে ---
সিক্ত প্রতি অঙ্গ থেকে চুঁইয়ে পড়া বৃষ্টিকণার সাথে
মিশে যাব তোমার রন্ধ্রে রন্ধ্রে।
আসমানী রং ধার নিয়ে শরতের আকাশে
পেখম মেলবে তোমার রূপকথাময় পংক্তিগুলি।
ঝরা পাতা উড়ে যাবে তোমাকে লেখা
এক এক ছত্র ছন্দ নিয়ে।
কুয়াশার চাদর জড়িয়ে, মরা চাঁদের আলোয়,
হৈমন্তী সন্ধ্যা নিভৃতে গাঁথবে সেই ছন্দমালিকা।
শীতের সকালে তুমি হবে একফালি মিঠে রোদ্দুর,
কমলা কোয়ার মেদুরতা থাকবে তোমার ছোঁওয়ায়।
পড়ন্ত বেলায় তুমি হবে রাখাল-বাঁশির দেশোয়ালি সুর,
মজে আসা খেজুর রসের মদিরতা থাকবে
তোমার অস্পষ্ট গুনগুনানি তানে।
বাসন্তী বাতাসে তোমাকে ছুঁয়ে, আগামীর স্বপ্নে
চোখ মেলবে অপত্য নবপল্লবের দল।
নবীন শ্যামল ছন্দ বাজবে কুহু কুহু রবে...
বলো, তুমি আমার কবিতা হবে কবে?
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন