নতুন ভোর - মৃণাল বন্দ্যোপাধ্যায়

 



মনুষ্য সভ্যতার প্রথম সামাজিক শ্রেণিবিভাগের মধ্য দিয়ে,

চতুর্বর্ণ প্রথার সুচারু প্রয়োগের মাত্রাতিরিক্ত অনুশাসন সয়ে-

ইতিহাসে আমার প্রধান পরিচয় আমি মানুষ হয়েও মানুষের আজ্ঞাবহ দাস--

মুখ বুজে জীবনভর বাকি উচ্চতর শ্রেণির সেবা করার নির্মম পরিহাস।

আভিজাত শ্রেণির সেবা করাই সামাজিক স্বীকৃতিতে আমার পালনীয় ব্রত,

আমার জন্য না ছিল কোনও নিয়ম, শুধু সেবার জন্যই যেন নিয়োজিত।

ধ্যযুগীয় বর্বরতায় যুদ্ধবন্দী হিসেবে হয়েছি অকথ্য নির্যাতনের শিকার,

আমার নারীশরীর জুড়ে ঘৃণ্য ব্যবচ্ছেদ অভিজাত পুরুষের কামনার।

পণ্য হিসেবে প্রত্যহ বিক্রি হয়েছে আমার শ্রম আর ঘামে ভেজা অহংকার,

গর্জে উঠেছি আমি শিকাগো শহরের ‘হে’ মার্কেটে পেতে গণতান্ত্রিক অধিকার।

কেউই চায়নি আমাকে মানুষ হিসেবে ফিরিয়ে দিতে আমার প্রাপ্য সন্মান,

হেসেছেন অন্তর্যামী অলক্ষ্যে কারণ তাঁর মহিমায় আমরাও তাঁরই সন্তান।

‘শ্রমিক’ আজ আর আলাদা কোনো শ্রেণি নয় সইবে সবকিছু মুখ বুজে,

ধূলিধুসরিত ঘামে ভেজা শরীরের লুকানো যন্ত্রণায় সেজেছে যুদ্ধের সাজে।

পয়লা মে, মানবিকতার আর্তিতে শ্রমিকদরদী আইন পেয়েছে স্বীকৃতি,

একটা নির্মম পাশবিক অধ্যায়ে ঘটা অমানুষিক অত্যাচারের চিরবিলুপ্তি।।

 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন