পেন্ডুলাম - সবুজ পরিমল



         একে তো শীতকাল তার উপর রাতও ভালোই হয়েছে। জুবিলি মোড়টা পার করেই ফিফথ্ গিয়ারে শিফ্ট করলো সৌরভ। ফাঁকা রাস্তা, তাছাড়া এই রাস্তাটার দুর্নামও বিস্তর, যত তাড়াতাড়ি পেরিয়ে যাওয়া যায় ততই মঙ্গল। গেল মাসেই নিয়েছে গাড়িটা, সাদা রঙের টাটা নেক্সন। সাদা রঙটা ওর বড় পছন্দের। ইনক্রিমেন্টের পুরো টাকাটা ডাউন পেমেন্টেই চলে গিয়েছে। পাঁচগাছিয়া দুর্গা মন্দিরটা পার করেই হঠাৎ সাইকেল নিয়ে একেবারে গাড়ির সামনে এসে পড়লো একজন; চোখটা ধাঁধিয়ে গেলো। ব্রেক কষেও কোনও কাজ হল না। গাড়ি থেকে নেমে চারপাশটা ভালো করে দেখে নেয় সৌরভ, না কেউ কোত্থাও নেই, না কোনও মানুষ আর না একটা সিসিটিভি। সাদা এসএউভিতে ঠিকরে পড়েছে রক্ত। লোকটা বেঁচে আছে কি মরে গেছে কে জানে! সময় নষ্ট না করে নিশ্চিন্ত হয়ে গাড়ি স্টার্ট দেয় সৌরভ...


         গৌতমের ঠিকানা এখন ফুটপাতেই। এককালে কোলিয়ারিতে কাজ করতো সে। সে কাজও গেছে অনেক বছর। রাত কতটা হল ঠিক ঠাহর করতে পারে না সে। আচমকা সে দেখে একটা সাদা রঙের গাড়ি এদিক ওদিক করতে করতে তীরবেগে ওর দিকেই ছুটে আসছে। ব্রেকফেল করা গাড়িটা এসে সপাটে ধাক্কা মারলো রাস্তার পাশের মোটা অশ্বত্থ গাছটায়। দৌড়ে সেদিকে গেল গৌতম। সীটে বসা লোকটার গুরুতর আঘাত লেগেছে মাথায়। এখনই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া গেলে হয়তো বেঁচেও যেতে পারে। কিন্তু আশেপাশে গৌতম ছাড়া আর কেউ নেই। বেঁচে থাকলে হয়তো তাও কিছু একটা করতে পারতো সে। বছর চারেক আগে এইরকম একটা শীতের রাতেই তো...

  

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন