বঙ্গদেশের খাবার পৃথিবী বিখ্যাত হওয়ার কারণ শুধুমাত্র স্বাদ নয়, প্রতিটি খাবারে ব্যবহৃত উপকরণের বিভিন্নতা ও রন্ধন প্রণালীও এর অন্যতম কারণ। বাংলার ঐতিহ্যবাহী বহু রান্নায় ব্যবহৃত মৌলিক উপকরণ সমূহও বিশ্বের দরবারে বাংলার খাবারকে জনপ্রিয়তা দিয়েছে। বেশ কিছু ঐতিহ্যবাহী খাবারের রন্ধন প্রণালী তুলনামূলকভাবে জটিল ও সময়সাপেক্ষ হওয়ায় বর্তমান যুগের ব্যস্ততার জীবনে প্রায় হারিয়েই গিয়েছে। আমরা আমাদের পত্রিকায় চেষ্টা করছি এরকমই কিছু হারিয়ে যাওয়া খাবার ও তাদের রন্ধন প্রণালীর খোঁজ দিতে। পত্রিকার বিভিন্ন সংস্করণে আমরা হারিয়ে যাওয়া বাংলার খাবারের খোঁজ দেব।
চিংড়ি করলা পুরপুরিঃ
উপকরণঃ
করলা ( গোল ও পাতলা করে কাটা) – ৫০ গ্রাম
আলু ( গোল ও পাতলা করে কাটা) – ৫০ গ্রাম
চিংড়ি মাছ (মাঝারি আকৃতির) – ২৫০ গ্রাম
পেঁয়াজ কুচি – ৫০ গ্রাম
কাঁচা লঙ্কা (লম্বা করে টুকরো করা) - ৪/৫টি,
আদা – রসুন বাটা – ২ চামচ
সর্ষে তেল – ২০০ মিলি
জিরে বাটা – ১ চামচ
লঙ্কা গুঁড়ো – ২ চামচ
হলুদ গুঁড়ো – পরিমাণ মত
নুন – পরিমাণ মত
জল – পরিমাণ মত
প্রণালীঃ
১.চিংড়ি মাছ ধুয়ে পরিষ্কার করে নুন ও হলুদ মাখিয়ে আধা ঘণ্টা রেখে দিতে হবে।
২. কড়াইতে তেল গরম করে করলা এবং আলু সোনালি বাদামী হওয়া পর্যন্ত ভাজতে হবে। ভাজা হয়ে গেলে তুলে রাখতে হবে।
৩. ভাজা তেলের সাথে আরও খানিকটা তেল যোগ করে আগে পেঁয়াজ স্বচ্ছ হওয়া অবধি ভেজে নিয়ে জিরে, রসুন এবং আদা বাটা মিশিয়ে কষিয়ে নিতে হবে।
৪. এর মধ্যে নুন হলুদ মাখানো চিংড়ি দিয়ে হালকা বাদামী হওয়া পর্যন্ত কষাতে হবে। প্রয়োজনে অল্প জল দেওয়া যায়।
৫. এর মধ্যে করোলা ভাজা, আলু ভাজা, হলুদ গুঁড়ো, লাল মরিচ গুঁড়ো এবং নুন যোগ করে ভালো করে মেশাতে হবে।
৬. সামান্য জল দিয়ে মাখা মাখা হওয়া অবধি রান্না করতে হবে।
৭. আঁচ বন্ধ করে ৩/৪ টেবিল চামচ কাঁচা সর্ষে তেল মিশিয়ে নামিয়ে নিতে হবে।
৮. গরম গরম পরিবেশন করতে হবে।
ডাবের পায়েসঃ
উপকরণঃ
ছানা – ১০০ গ্রাম
ডাবের শাঁস – ১০০ গ্রাম
নারকেল জল – ৩০০ মিলি
দুধ – ২০০ মিলি
কনডেন্সড মিল্ক – ৫০ মিলি
মধু – ২৫০ মিলি
নুন – এক চিমটি
এলাচ গুঁড়ো – ১/৪ চামচ
জায়ফল গুঁড়া - ১/৪ চামচ
ঘি – ৫০ মিলি
কাজু, কিশমিশ, পেস্তা, আখরোট, আমণ্ড ( মিশ্রিত) – ২৫ গ্রাম
প্রণালীঃ
১. প্রথমে একটি বড় শাঁসযুক্ত ডাব থেকে জল ও শাঁস বার করে নিতে হবে।
২. ডাবের শাঁস বার করে মিক্সিতে ঘুরিয়ে নিতে হবে। তবে খুব বেশি যেন মিহি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
৩. একটি বড় পাত্রে নারকেল জল, দুধ, লবণ, এলাচ গুঁড়া এবং জায়ফল গুঁড়া একত্রিত করে মাঝারি আঁচে ফোটাতে হবে, যতক্ষণ না দুধ ঘন হয়ে যায়।
৪. কনডেন্সড মিল্ক মিশিয়ে দুধ ঘন করে নিতে হবে।
৫. ছানা মিহি করে মেখে নিতে হবে। আঁচ কম করে ধীরে ধীরে ছানা যোগ করতে হবে এবং অনবরত নাড়তে হবে।
৬.আঁচ বন্ধ করে ডাবের শাঁস, মধু ও ঘী মিশিয়ে দিতে হবে।
৭. বাদাম, পেস্তা, কিশমিশ প্রভৃতি কুচো করে মিশিয়ে দিতে হবে।
৮. ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা করে পরিবেশন করতে হবে।
বেগুনের খাট্টাঃ
উপকরণ:
বেগুন – ২৫০ গ্রাম
জল ঝরানো দই – ১০০ গ্রাম
সর্ষে তেল – ২০০ মিলি
পেঁয়াজ কুচো – ২০ গ্রাম
রসুন কুচো – ২ চামচ
আদা বাটা – ১ চামচ
হলুদ গুঁড়ো – পরিমাণ মত
নুন - পরিমাণ মত
লাল লঙ্কা গুঁড়ো – স্বাদ অনুযায়ী
গরম মসলা গুঁড়া – ১ চামচ
তেঁতুলের ক্বাথ - ২ টেবিল চামচ
খেজুর বাটা – ৫০ গ্রাম
জল – পরিমাণ মত
জল ঝরানো দই – ১০০ গ্রাম
সর্ষে তেল – ২০০ মিলি
পেঁয়াজ কুচো – ২০ গ্রাম
রসুন কুচো – ২ চামচ
আদা বাটা – ১ চামচ
হলুদ গুঁড়ো – পরিমাণ মত
নুন - পরিমাণ মত
লাল লঙ্কা গুঁড়ো – স্বাদ অনুযায়ী
গরম মসলা গুঁড়া – ১ চামচ
তেঁতুলের ক্বাথ - ২ টেবিল চামচ
খেজুর বাটা – ৫০ গ্রাম
জল – পরিমাণ মত
প্রণালীঃ
১. বেগুন লম্বা আকারে টুকরো করে নিতে হবে।
২. কড়াইতে তেল গরম হলে বেগুন টুকরো হালকা সোনালি করে ভেজে তুলে নিতে হবে।
৩. কড়াইতে পেঁয়াজ কুচো স্বচ্ছ করে ভেজে নিয়ে তার মধ্যে রসুন এবং আদা বাটা মিশিয়ে কষাতে হবে।
৪. হলুদ, নুন, লঙ্কাগুঁড়ো মিশিয়ে অল্প কষিয়ে নিয়ে এর মধ্যে প্রথমে দই মিশিয়ে অনবরত নাড়াতে হবে।
৫. এর মধ্যে তেঁতুল এবং খেজুর বাটা অল্প জলে গুলে কশান মশলার মধ্যে মিধিয়ে দিতে হবে।
৬. জল দিয়ে সমস্ত মশলা ভালো করে কষিয়ে ঘন করে নিতে হবে।
৭. এর মধ্যে বেগুন ভাজা মিশিয়ে নামিয়ে নিতে হবে। গরম গরম ভাতের সাথে পরিবেশন করতে হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন