বললাম - আপনি ভালোভাবে বসুন। আমার অসুবিধা হবে না।
ভদ্রলোক মুখ
খুললেন - কোথায় যাবে মা? তুমি আমার
মেয়ের বয়সী তাই 'তুমি' করেই বলছি। কিছু মনে করোনি তো?
- না না আমি
কিছুই মনে করিনি। আমি শীতলপুর যাবো। ওখানে ব্লকের স্টাফ। আপনি?
- আমি নামবো
নারায়নপুরে।
'মা ' শব্দটাই ভদ্রলোককে আমার অনেকটা
কাছে টেনে নিল। বুঝতে পারছি বাসের দোলায় আমার চোখ বন্ধ হয়ে আসছে। মাথাটা
ভদ্রলোকের কাঁধে পড়ে বেশ আরাম নিচ্ছে, আমার খেয়াল নেই। হঠাৎ একটা ঝাঁকুনিতে আমার
তন্দ্রা ছুটে যেতেই দেখি আমার মাথাটা ভদ্রলোকের কাঁধে। ভীষণ লজ্জিত হয়ে বললাম - ছি ছি! একী! আমি
অন্যায় করে ফেলেছি।
-ধ্যুর মেয়ে, এটা অন্যায় কেন? আমার মেয়ে তো এই রকমই করতো। তুই তো আমার মেয়ের মতোই।
- করতো
বললেন, এখন করেনা?
- না। গলাটা
কেঁপে উঠল। হারিয়ে গেছে।
ভদ্রলোকের
মুখের দিকে তাকিয়ে মনে হলো ব্যথায় ভরা প্রাণ। সব বাবারা কী এরকমই? কিছুক্ষণ পূর্বের ধারনা ভুল?
নারায়নপুরে
বাস থামলে ভদ্রলোক নামার জন্য এগিয়ে যায়। আমিও পিছন পিছন গিয়ে নেমে পড়ি।
ভদ্রলোক বললেন - কীরে তুই তো শীতলপুর যাবি। এখানে কেন নামলি?
- যেতে ইচ্ছে
করছে না। নেমে একটা প্রণাম
করে বললাম আমাকে ক্ষমা করুন।
- ক্ষমা? অন্যায়টা কি তাই জানলাম না তো। ক্ষমা কেন রে?
আমি মুখ
নিচু করে আত্মগ্লানিতে দগ্ধ হতে হতে বললাম - সেটা আমিও বলতে পারবনা।
অসাধারণ একটা লেখা। ভীষণ প্রাসঙ্গিক একটা গল্প। মন ছুঁয়ে গেল।
উত্তরমুছুনএকটি মন্তব্য পোস্ট করুন