দুঃস্বপ্ন - অর্পিতা সাহা



 রাস্তা পেরিয়ে বাঁয়ে বাঁক নিয়ে দ্রুত পায়ে এগিয়ে যায়  রিমলী পাড়ার ঠিক মোড়ের মাথায় বড় রাস্তার সামনে একটা জটলাঅনেক লোকের ভিড়

দূর থেকে শুধু মানুষের কোলাহল ভেসে আসছে কী ঘটেছে বোঝা যাচ্ছে না... ভয়ে রিমলীর হাত পা ঠান্ডা হয়ে যায় তবে কী...

আজ নিয়ে তিনদিন হল রোজ ভোর রাতে একই স্বপ্ন দেখে চলেছে রিমলী একটা গাড়ি দ্রুত গতিতে এসে কিছু মানুষকে পিষে দিয়ে চলে গেল।চারিদিকে ভয়ানক আর্তনাদ আর চাপ চাপ টাটকা লাল রক্ত ,ওমা গো বলে চেঁচিয়ে ওঠে ঠিক তখনই ঘুমটা ভেঙে যায় রোজ। গাড়িটা কী গাড়ি ছিল কিছুতেই মনে করতে পারে না ও লোকে বলে ভোরের স্বপ্ন সত্যি হয় কিন্তু ও ঈশ্বরের কাছে রোজ প্রার্থনা করে এ স্বপ্ন যেন কোনোদিন সত্যি না হয়...

আজও স্বপ্নটা দেখেছিল ও তারপর সেই যে ভোর চারটেতে ঘুমটা ভাঙল আর ঘুম এলো না...

গায়ে একটা পাতলা চাদর দিয়ে বারান্দায় বেলি ফুলের গাছটার সামনে চেয়ার পেতে বসলো। সবে পুব আকাশে আলো ফুটেছে, নতুন শীত পড়ছে উত্তুরে বাতাসে কেমন শীত শীত ভাব কদিন ধরেই, ভালো ঘুম হচ্ছে না রাতে শেষ ভোরের স্বপ্নটা যেন তাড়া করে বেড়াচ্ছে সারাদিন ওকে...

 আর আজ সাত সকালে দুধের ডিপো থেকে দুধ আনতে এসে এত লোকের জটলা দেখে আতঙ্ক হচ্ছে। কী হয়েছে ওখানে জিজ্ঞাসা করতেই ভিড়ের মধ্যে থেকে কেউ একজন বলে উঠল অ্যাক্সিডেন্ট... 

ভয়ে বুক কেঁপে ওঠে রিমলীর ভিড় ঠেলে এগিয়ে যেতেই চোখে পড়ে একটা কুকুর গাড়ির আঘাতে পায়ে চোট পেয়েছে যার বাইকে দুর্ঘটনা ঘটেছে তিনি কুকুরটিকে সাধ্য মতন ফার্স্ট এইড দিয়ে  সারিয়ে তোলার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন একজন পশু চিকিৎসককে সঙ্গে নিয়ে। চারিদিকে মানুষের জটলা পশুর চিকিৎসা চলছে দেখে...

রিম হাঁফ ছেড়ে বাঁচে বর মৃণাল ঠিকই বলে  ও বড্ড কুসংস্কারে বিশ্বাস করছে আজকাল, আপনমনে হাঁটতে হাঁটতে বড় রাস্তাটা পেরোতে গিয়ে উল্টো দিক থেকে আসা একটা লরি হঠাৎ সজোরে ধাক্কা মারে....তারপর অসহ্য যন্ত্রণা...   সবটা অন্ধকার...চারিদিকে কোলাহল...আর চাপ চাপ রক্ত....

 

 

1 মন্তব্যসমূহ

  1. শেষের মোচড়টা গল্পটাকে অণুগল্প হিসেবে সম্পূর্ণ রূপদান করেছে। সুন্দর লেখনী।

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন