- 'আসুন আসুন আসুন, মেহেরবন, কদরদান, সাহেবান, একবার এসে দেখে যান দড়ির ওপর এই ছোট্ট মেয়ে কেমন হেঁটে যাচ্ছে, কেমনভাবে একটা লম্বা লাঠি হনুমানের মাফিক চড়ে ও ঝুলতে থাকা আপেলটা পেড়ে নিয়ে আসবে, আসুন আসুন বাবু, দেখুন দেখুন, মাত্র চার বছরের এই লড়কি কি সব কেরামতি দেখায় দেখে যান ।'
চিৎকার শুনে বেশ খানিকটা ভিড়
জমে গেল মন্ডলপাড়ার রাস্তায় । ভিড়ে অবশ্য বেশিরভাগই স্কুল ফেরত কচি কাঁচা । বাবা
মায়ের হাত ধরে তারা দেখ্তে
এসেছে কালুর চার বছরের মেয়ে লাড়লির খেলা ।
দড়ির উপর দিয়ে মেয়েটা হেঁটে
যাচ্ছে । কালু একদিকের বাঁশটা শক্ত করে ধরে দাঁড়িয়ে আছে । বুকটা তার ভয়ে ধুকপুক
করছে। মাস কয়েক আগে কালুর বড় মেয়েটা এই দড়ি থেকে পড়ে গিয়েই পা ভেঙেছিল । ঠিকমত
এখনো হাঁটতে পারে না সে । এদিকে কালুর ব্যবসা বন্ধ হয়ে যেতে ভাত জুটছেনা গোটা
পরিবারটার । তাই ওই দুধের মেয়েটাকেই কোনমতে শিখিয়ে পড়িয়ে রাস্তায় নেমেছে কালু ।
দড়ি চড়া শেষে লাড়লি এখন একটা
সরু বাঁশের লাঠি বেয়ে উপর দিকে উঠছে । কালু লাঠির শেষ অংশটা পেটে চেপে ধরে উপর
দিকে তাকিয়ে আছে । বাচ্ছা বড় সবাই লাড়লির খেলা দেখে খুব খুশি, তারা হাততালি দিচ্ছে প্রাণ ভরে।
তার মাঝেই মেয়েটার একবার পা পিছলে গেল। কালু ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলল। ছেলে মেয়েরা
হো করে চেঁচিয়ে উঠ্তে কালু বুঝল, মেয়েটা এ যাত্রায় সামলে গেল।
লাড়লি এখন লাঠির একেবারে উঁচুতে
। হাত বাড়িয়ে ঝোলানো আপেলটা পাড়ার চেষ্টা করছে। ছোট্ট মেয়েটার মুখটা লাল হয়ে গেছে।
সেদিকে তাকিয়ে কালুর চোখে জল এল। কিন্তু তাড়াতাড়ি নিজেকে সামলে নিল সে। চোখ ঝাপসা
হয়ে গেলে খেলায় যদি ভুল হয়ে যায়! এ যে পেটের আগুন, চোখের জলে এ তো নেভে না।
শেষ লাইনটা অসাধারণ
উত্তরমুছুনএকটি মন্তব্য পোস্ট করুন