
“বীরেনবাবু কর্নেল সুরেশ বিশ্বাসের জীবনী পরে মুগ্ধ হয়েছিলেন এবং তাঁর মতো হতে চেয়েছিলেন। সুরেশ বিশ্বাস ঘর ছেড়ে খালাসি হয়ে বিদেশে গিয়ে শেষে ব্রেজিলে যুদ্ধ করে নাম করেছিলেন সেটা আমার মনে ছিল। যেটা মনে ছিল না সেটা আমি কাল রাত্রে ‘বাঙালির সার্কাস’ বলে একটা বই থেকে জেনেছি। সেটা হল এই যে সুরেশ বিশ্বাস ছিলেন প্রথম বাঙালি যিনি বাঘ সিংহ ট্রেন করে সার্কাসের খেলা দেখিয়েছিলেন। তার সবচেয়ে আশ্চর্য খেলা ছিল সিংহের মুখ ফাঁক করে তার মধ্যে মাথা ঢুকিয়ে দেওয়া।” - ছিন্নমস্তার অভিশাপ, সত্যজিৎ রায়

[১]
সেপ্টেম্বর ১৮৯৩, রিও দে জেনেইরো, ব্রাজিল। ভয়াবহ নৌবিদ্রোহে নাকাল তখন গোটা দেশ। রাজধানী রিওকে ঘিরে একযোগে গোলা ছুঁড়ছে কুড়িটি যুদ্ধজাহাজ। থেমে থেমে গর্জে উঠছে উপকূলস্থ দুর্গ-কামান। বিদ্রোহীদের সাথে পাল্লা দিয়ে ব্রাজিলের সরকার অনুগত সেনাও পাল্টা শানাচ্ছে আক্রমণ, যেন কেউ কারো চেয়ে কম নয়। বিদ্রোহীরা ততক্ষণে বুঝে গেছে, এভাবে সম্ভব নয়! পরিকল্পনা পাল্টে তারা রিও ডি জেনেইরোর রাজ্যের রাজধানী নাথেরয় শহরের দিকে অগ্রসর হয়, এবং সহসাই সেখানকার দখল নিয়ে নেয়। প্রচণ্ড বিচলিত হয়ে পড়লেন নাথেরয় রক্ষণের দায়িত্বে থাকা সেনাপতি। তার হাতে ছিলো মাত্র পঞ্চাশজন সেনা। এই সামান্য সেনা নিয়ে দখলদারদের হঠাতে চাই মহাকুশলী এক রণবীর। খোঁজ খোঁজ রব সেনাশিবিরে। দৃশ্যপটে তখন আবির্ভূত হন এক পরাক্রমশালী বাঙালি সৈন্য। সেই পঞ্চাশজন সৈন্য নিয়েই নাথেরয় পুনরুদ্ধার করলেন তিনি। দমন হলো বিদ্রোহ।




একটি মন্তব্য পোস্ট করুন