শুভ বিজয়া - তমেকা ঘোষ


হাই দাদুভাই, হ্যাপি বিজয়া দশমী, আমার প্রণাম নিও।”

- “তুমিও আমার অনেক অনেক আদর নিও দিদিভাই, খুব ভালো থেকো।”

আমেরিকা প্রবাসী সাত বছরের নাতনিটিকে ভার্চুয়ালি আশীর্বাদ পাঠালেন ভবতোষ। সেই কবে বছর পাঁচ আগে পিউকে তিনি আর সুষমা সামনে থেকে দেখেছিলেন, ছুঁয়েছিলেন ওর কচি কচি নরম হাতগুলো। তারপরই তাদের একমাত্র ছেলে অর্পণ জানিয়ে দিলো পিউয়ের স্কুল শুরু হয়ে গেছে। পুজোর সময় ছুটি থাকে না, আর তাই পুজোয় বাড়ি আসা যাবেনা। আর শীতে তো বিভিন্ন জায়গায় ঘোরার প্ল্যন থাকে। তবে ভবতোষ আর সুষমা যদি মাঝে মাঝে আমেরিকায় আসেন তাদের সাথে দেখা করতে, তারা ব্যবস্থা করে দেবে।

ভবতোষ সব বুঝেছিলেন, সুষমাকেও বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন। পুরোনো বাড়িখানাকে আঁকড়ে বুড়ো-বুড়ির একলা সংসার আর মাঝে মাঝে প্রযুক্তির সাহায্যে দূরে চলে যাওয়া মানুষগুলোকে একটু কাছে পাওয়ার চেষ্টা। এটুকুই তো আছে জীবনে তাদের।

ভবতোষ আশীর্বাদ তো পাঠালেন কিন্তু মনটা তার খুঁতখুঁত করতে লাগল। মিষ্টিমুখ ছাড়াতো বিজয়া সম্পূর্ণ হয় না। নাতনির কাছে বিজয়ের নাড়ু আর মিষ্টি পৌঁছানোর উপায় তার জানা নেই। কিন্তু তার যে বড় মন কেমন করছে আজ।

কিছুক্ষণ ভাবার পর ভবতোষ সোজা পৌঁছে গেলেন নিকটস্থ সত্য ভারতী অনাথাশ্রমে। সেখানকার ছোট্ট ছোট্ট বাচ্ছাদের মুখে তুলে দিলেন নিমকি, গজা, মিহিদানা আর হরেকরকম মিষ্টি। ওদের মাথায় ভবতোষের আশীর্বাদের হাত কোথাও হয়তো তার দূরদ্বীপবাসিনী নাতনীটিকেও ছুঁয়ে গেল|


1 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন