অযোগ্য - সবুজ পরিমল

 


স্যার একবার দেখুন। কী ঝরঝরে লেখা! কী অভিনব বিষয় ভাবনা!” সহ সম্পাদক বিতান লাহিড়ির কথায় সম্পাদক মহাশয় খুব একটা পাত্তা দিলেন বলে মনে হলো না। হয়ত অন্যমনস্ক আছেন এই ভেবে পুনর্বার কথাটা পাড়লো বিতান। এবার রীতিমতন খেঁকিয়ে উঠলেন কেশববাবু, “আহ! কেন বিরক্ত করছ বলো তো! তুমি জানো না, লেখক তালিকা তৈরি হয়েই আছে। নতুন করে আর কাউকে ঢোকানো যাবে না।”

- “অনিমেষ চক্রবর্তীর লেখাটা তো একেবারেই পাতে দেওয়ার মতো নয় স্যার। ওর জায়গায় যদি...”

- “ক্ষেপেছ নাকি! ব্যাক কভারের বিজ্ঞাপনটা জোগাড় করে দিয়েছে অনিমেষ। আর তুমি কিনা! সত্যি তুমি না! পাগলেও নিজের ভালোটা বোঝে!”

- “তাহলে স্যার শর্মিলা উপাধ্যায়ের লেখাটা। উনি তো আর বিজ্ঞাপন দেননি!”

- “হাসালে হে বিতান তুমি! গত বইমেলায় ওর একক বই ‘আছে নাকি নেই’ এর সাইনড্ কপি কত সেল হয়েছিল জানা আছে! ছাড়ো ওসব। কমলেশকে ফাইনাল প্রুফটা দেখে নিতে বোলো। আমি কাল আর আসব না। তুমি ফাইনালি একবার চোখ বুলিয়ে নিও। এই সপ্তাহেই প্রেসে দিয়ে দেব...”

- “আচ্ছা স্যার।”

প্রবীণ সম্পাদক কেশব রায়ের এহেন ব্যবহারে মুষড়ে পড়ল বছর তিরিশের উঠতি সহ সম্পাদক। ভবিষ্যতে হয়ত এই চেনা জুতোতেই পা গলাবে সে। এই মুহূর্তের অন্যতম জনপ্রিয় পত্রিকা ‘অলোকেন্দু’র শারদ সংখ্যার লেখক তালিকা বেরিয়েছে আজ। অনেক খুঁজেও নিজের নামটা দেখতে না পেয়ে স্বপ্নদীপের বুকের ভেতরটা টনটন করে উঠল। এই নিয়ে চার বার। নিজের সবটুকু উজাড় করে দিয়েছিল এবার। তাই একটু বেশিই আশা ছিল। কিন্তু তাও! প্রত্যেকটা সংখ্যা পড়ে আর ভাবে এতটা খারাপ লেখেও! অন্য দুটো পত্রিকাতেও একই অবস্থা। না কিচ্ছু হচ্ছে না! কিচ্ছু না...

ডায়েরির মধ্যে অসমাপ্ত গল্পটার ফাঁকে কলমটা খোলা অবস্থায় রেখেই তাকের উপর তুলে রাখল সে...


1 মন্তব্যসমূহ

  1. সর্বজয়া পত্রিকার সমস্ত কলাকুশলীদের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা ও আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করি। সঙ্গে শুভ শারদীয়ার আগাম শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। মায়ের আশিসে এইভাবেই সমৃদ্ধ হোক সর্বজয়া পত্রিকা, সমাদৃত হোক দিকে দিকে।

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন