বছরভর ওজন মাপার যন্ত্রের দিকে কড়া নজর থাকলেও পুজোর ককিদিন বাঁধভাঙা আনন্দে বেচারা পেট ব্যতিব্যস্ত হয়ে থাকে। তবে এই "ক'দিন"-এর অর্থ গোটা একটা মাস। শুধু দুর্গাপুজো হলেই তো আর হল না! লক্ষ্মীপুজো, কালীপুজো, ভাইফোঁটা এই করে খেতে খেতেই একমাস কেটে যায়। তারপর আবার বাঙালিদের কাছে ভালো ভালো খাবার মানে তেল ঝাল আর হাজার রকম মশলায় মাখামাখি রান্না। এদিকে রান্নার শেষে ঘি না পড়লে সেটা নাকি রান্নাই নয়! তো এতসব খাওয়াদাওয়ার পালা সাঙ্গ হওয়ার পর ওজনের বহর দেখেই তো চক্ষু চড়কগাছ! সেই কারণে আজ এমন কয়েকটি সুস্বাদু রান্নার রেসিপি দেওয়া হল যেগুলি ওজন কমানো এবং ঠিক রাখার জন্য একেবারে আদর্শ।
১) স্প্রাউট ডাল:
এটি মূলত নৈশভোজে খাওয়া হয়। এর জন্য কী কী লাগবে দেখে নেওয়া যাক।
উপকরণ:
- অঙ্কুরিত মুগ কড়াই - ১ কাপ
- গোটা জিরে - ১ চা চামচ
- আদা রসুন বাটা - ১ চা চামচ
- পেঁয়াজ - ১ টা মাঝারি
- টম্যাটো - ১ টা
- হলুদগুঁড়ো - ১/২ চা চামচ
- লঙ্কাগুঁড়ো - ১/২ চা চামচ
- নুন - স্বাদমতো
- তেল - পরিমাণমতো
- প্রেসার কুকারে অল্প তেল দিয়ে তাতে গোটা জিরে ও আদা রসুন বাটা দিয়ে সামান্য নেড়ে নিতে হবে যতক্ষণ না কাঁচা গন্ধটা চলে যায়।
- এবার পেঁয়াজ আর টম্যাটো কেটে মিশিয়ে দিতে হবে।
- এরপর মুগ কড়াইটা দিয়ে দিতে হবে। এর মধ্যে হলুদগুঁড়ো, লঙ্কাগুঁড়ো ও নুন দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে ঢাকনা বন্ধ করে জোর আঁচে একটা এবং ঢিমে আঁচে দু'খানা সিটি দিয়ে গ্যাস বন্ধ করে দিতে হবে।
- প্রেসার নিজে নিজে বেরিয়ে যাওয়ার পর ঢাকনা খুলে নিতে হবে।
- ইচ্ছে হলে মশলা ছাড়াও রান্নাটি করা যায়। সেক্ষেত্রে হলুদগুঁড়ো ও লঙ্কাগুঁড়ো না দিয়ে শুধু কাঁচালঙ্কা কুচি সহযোগে রান্নাটি করা যাবে। চাইলে শেষে ধনেপাতা কুচিও যোগ করা যায়।
২) ডিম-সবজির ভুর্জি :
ডিম খেতে কার না ভালো লাগে! তবে সবজি কিন্তু অনেকেই পছন্দ করে না। তখন সবজির মধ্যে ডিম দিয়ে দিলেই কেল্লা ফতে! সুস্বাদু আর পুষ্টিকরও।
- উপকরণ :
- পালংশাক, গাজর, বিনস, ব্রকোলি, টম্যাটো - কুচি করে কাটা এক বাটি
- ডিম - ২/৩ টি
- গোলমরিচ গুঁড়ো - অল্প
- নুন - স্বাদমতো
- তেল - পরিমাণমতো
পদ্ধতি :
- প্রয়োজনমতো পরিমাণে নিয়ে সবজিগুলো কুচি করে কেটে নিতে হবে।
- ননস্টিক প্যানে অল্প তেল গরম করে সবজিগুলি দিয়ে ওর উপর নুন আর গোলমরিচের গুঁড়ো ছড়িয়ে খানিকক্ষণ ঢাকা দিয়ে রাখতে হবে।
- নরম হয়ে এলে ডিমগুলো ভেঙে নিয়ে ভালো করে নেড়ে ঘেঁটে মিশিয়ে দিলেই তৈরি ডিম-সবজির ভুর্জি।
৩) সবজি-পনির :
ডিমের বদলে পনির দিয়েও কিন্তু রান্নাটি করা যায়। তবে সেক্ষেত্রে সবজিতে সামান্য পরিবর্তন আনতে হবে।
উপকরণ :
- পনির - ৮০-১০০ গ্রাম (কিউব করে কাটা)
- ক্যাপসিকাম - ১টি
- টম্যাটো - ১টি
- পেঁয়াজ - ১টি মাঝারি
- গাজর - ১টি ছোটো
- পালংশাক - পরিমাণমতো
- বিনস্ - পরিমাণমতো
- সুইট কর্ন - আধ কাপ
- মটরশুঁটি - আধ কাপ
- গোলমরিচ গুঁড়ো - অল্প
- নুন - স্বাদমতো
- তেল - পরিমাণমতো
পদ্ধতিঃ
- একটি পাত্রে মাঝারি মাপে কাটা ক্যাপসিকাম, টম্যাটো, পেঁয়াজ, গাজর, পালংশাক, বিনস্, সুইট কর্ন, মটরশুঁটি সব একসাথে সেদ্ধ করে নিতে হবে।
- ননস্টিক প্যানে অল্প তেল গরম করে সবজি আর পনির স্টার ফ্রাই করতে হবে।
- উপর থেকে গোলমরিচ আর নুন ছড়িয়ে দিলেই গরম গরম খাবার তৈরি।
৪) হালকা চিকেন কারি :
চিকেন বা মাটন না থাকলে তো আবার বাঙালিদের খাবার মুখে
রোচে না! পুজোর সময় অনেক মাটন হয়েছে, তাই ওটা এখন থাক। এমনিতেও বেশি মাটন খাওয়া
স্বাস্থ্যকরও নয়। তাই চিকেনের হালকা অথচ সুস্বাদু একখানা রেসিপি বলা যাক।
- মুরগীর মাংস - ৪০০ গ্রাম (মাঝারি মাপে কাটা)
- গোটা জিরে - ১ চা চামচ
- পেঁয়াজ - ১টি
- আদা রসুন বাটা - ১ টেবিল চামচ
- টম্যাটো পিউরি - ১ কাপ
- জিরেগুঁড়ো - আধ চা চামচ
- ধনেগুঁড়ো - আধ চা চামচ
- হলুদগুঁড়ো - ১/৪ চামচ
- লঙ্কা গুঁড়ো - ১ চা চামচ
- পাওভাজি মশলা - ১ টেবিল চামচ
- ধনেপাতা - পরিমাণমতো
- নুন - স্বাদমতো
- তেল - পরিমাণমতো
পদ্ধতি :
- একটি ননস্টিক পাত্রে তেল গরম করে তাতে গোটা জিরে দেওয়ার পর পেঁয়াজ ভাজতে হবে যেন সোনালি হয়ে যায়।
- এবার ওতে আদা রসুন বাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ ভাজতে হবে। তারপর এতে দিতে হবে টম্যাটো পিউরি এবং সামান্য নুন।
- খানিকক্ষণ রান্নার পর এতে মুরগীর মাংস, জিরেগুঁড়ো, ধনেগুঁড়ো, হলুদগুঁড়ো, লঙ্কাগুঁড়ো, পাওভাজি মশলা এবং ধনেপাতা দিয়ে বেশি আঁচে রান্না করতে হবে।
- এবার এতে দেড় কাপ জল যোগ করে আঁচ মাঝারি রেখে পাত্রটি ঢাকা দিয়ে দিতে হবে। মাংস সেদ্ধ হয়ে গেলে নামিয়ে নিতে হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন