তাল কাটে শহরের অন্যতম একটা হাইরাইজের ফ্রন্টগেটে। সিকিউরিটি চেক করে সোজা চলে যায় আন্ডারগ্রাউণ্ড পার্কিং-য়ে। সওয়ারী মনোহর শর্মা সামনের এলিভেটরের দিকে পা বাড়ায়। রাজেনের ডিউটির অর্ধসমাপ্তি। বাকি কয়েক ঘণ্টা ওই চারদুয়ারীর মধ্যেই কেটে যায় তার। দুপুরে টিফিন ক্যারিয়ারের খাবারটুকু শেষ করে বাতানুকূল পরিবেশে শরীরটা এলিয়ে দেয়। ভাতঘুমের মধ্যে দিয়ে সমান্তরাল জগতের দরজাটা খুলে যায়। স্বপ্নের ফেরারিটার স্টিয়ারিং নেই।
তার জায়গায় দুপাশের সুদৃশ্য দুই ডানা মেলে পেঁজা তুলোর আকাশে উড়ে বেড়ায় রাজেন, উড়তেই থাকে। এই রোজগারে বিয়ে করা যায় না। ভাবেওনি রাজেন। কিন্তু বেশ কয়েকদিন ধরে মায়ের শরীরটা বড্ড খারাপ। ডিউটি শেষে তাই কিছু টাকা অগ্রিম চেয়েছিল মালিকের থেকে। বিনিময়ে টাকা বাদ দিয়ে বাকি সবটুকুই জুটেছে। পরাবাস্তবের কাচের স্বর্গটা ভেঙে চুরে একাকার। লিফটের সুবিধাটুকুও আজ মিথ্যে বলে মনে হয়। চোদ্দতলার উপর থেকে দরদর করে ঘামতে ঘামতে নেমে আসে রাজেন। গ্যারেজে রাখা লজঝড়ে সাইকেলটার প্যাডেলে চাপ দেয়। ক্যাঁচ ক্যাঁচ শব্দে সাইকেলটাও যেন কঁকিয়ে ওঠে...
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন