কবির অভিব্যক্তি - বিনিময় দাস

 

কবি জাগে-

এ জাগা সাধারণের মতো জাগা নয়,

পৃথিবী তো রাতের আঁধারে ঘুমায়

আর গা ঝাড়া দিয়ে ওঠে

               সূর্য্য  লাল হলে রাগে।

কবি নিজেকে রাখে

আজীবন  প্ৰতিনিয়ত সূক্ষ্ম চেতনার ভাগে।

 

কবি চলে-

এ চলা সাধারণের মতো চলা নয়,

পৃথিবী তো চলে- পথে পা ফেলে,

কখনো পথের ক্লান্তিতে থামে-

          শান্তি পায় গন্তব্য পেলে।

কবির পথ পাঠকের হৃদয়ের আঙিনা,

শব্দের সিঁড়ি বেয়ে কবি চলে

                     সময়ের তালে।

 

কবি ভালোবাসে-

এ ভালোবাসা সাধারণের মতো ভালোবাসা নয়,

পৃথিবী তো ভালোবাসাকে রাখে

হৃদয়ে স্বাৰ্থের মিশ্ৰণে,

মন ভোলানো দ্ৰবণে ওপ্ৰান্ত হাসে

কবির ভালোবাসায় স্বাৰ্থের স্থান পরিধি পারে,

লোভের আঁধারে হারায় না কবির হৃদয়-

পৃথিবীর জন্য কবি ত্যাগের সাগরে ভাসে।

 

কবি হাসে-

এ হাসি সাধারণের মতো হাসি নয়,

পৃথিবীর হাসি দু'মুখো অৰ্থ বহে,

মুখের হাসি নিৰ্ভেজাল রহে-

অন্তর যেন অন্য কথা কহে ।

কবির উদ্দেশ্য পৃথিবীর সুখ,

তাই পেলে কবি প্ৰাণ খুলে দেয় -সূর্য্যের প্ৰকাশে।

এ তো সরল হাসি-

যেভাবে শিশিরবিন্দু লেগে থাকে

মাঠের সবুজ কোমল ঘাসে।

 

কবি কাঁদে-

এ কাঁদা সাধারণের মতো কাঁদা নয়,

পৃথিবী তো কাঁদে কিছু না পাওয়ার অবসাদে।

আর খাদে- পিছলিয়ে পড়লে পা

জীবনপথে চলার সুবাদে।

কবি কাঁদে, যখন তাকে

স্বদেশ মাতৃর অন্তরব্যথা জড়িয়ে বাঁধে।

 

কবি দেখে-

এ দেখা সাধারণের মতো দেখা নয়,

পৃথিবী তো প্ৰকৃতি দেখে চোখ মেলে,

আসলে আকাশ, নদী, সাগর, পাহাড় দেখে

দৃষ্টিরে‌খার সামনে পেলে।

কবির দৃষ্টি পরিধি ভেঙে

যেকোনো কিছুর কেন্দ্রে‌ যায়,

জীব‌ই হোক- জড়‌ই হোক, হৃদয়ে পৌঁছায়।

তাই তো কবি ধরার আগে

অধরা সব অৰ্থ রাখে।

 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন