পুজোর মরশুমে বিউটি পার্লারে পা পড়েনি, হেন কেউ নেই! নতুন হেয়ার কাটের সঙ্গে চুল স্ট্রেট করা, কার্লি করা, হাইলাইট, স্মুথনিং – একেকজনের ছিল একেকরকম স্টাইল। তার মধ্যে পুজোর সময় বেরিয়ে রোদ, ঘাম, ধুলোবালি সবকিছুর অত্যাচারে চুলের একেবারে দফারফা! এখন সেসবের পালা সাঙ্গ হলে যেটা সবথেকে বেশি দরকার তা হলো চুলের সঠিক যত্নের এবং অবশ্যই ঘরোয়াভাবে। কারণ পার্লারে যে সমস্ত প্রসাধনী ব্যবহার করা হয় তার মধ্যে বিভিন্ন রাসায়নিক অত্যধিক পরিমাণে থাকে এবং সব রাসায়নিক সকলের ক্ষেত্রে সহনীয় নাও হতে পারে। সেই জন্য ঘরে হেয়ার স্পা করলে ব্যবহার্য প্রত্যেকটি জিনিসের সম্পর্কে আমাদের যথাযথ ধারণা থাকে এবং নিজেরাও নিশ্চিন্ত থাকতে পারা যায়। তাহলে জেনে নেওয়া যাক তার প্রতিটি ধাপ।
১) অয়েলিং :
প্রথম কাজ স্ক্যাল্পে ও চুলে ঠিকমতো তেল ম্যাসাজ করার। নিজের পছন্দমতো তেল যেমন অলিভ অয়েল, নারকেল তেল বা বাদাম তেল যেকোনো একটি গরম করতে হবে। গরম করার অর্থ, একটি পাত্রে তেল নিয়ে সেটিকে সরাসরি গ্যাসে গরম করা যাবে না। একটি বড় পাত্রে জল নিয়ে সেটিকে ফুটিয়ে নেওয়ার পর তার মধ্যে তেলের পাত্রটি বসিয়ে রেখে গরম করতে হবে। তারপর এই তেল আঙুল দিয়ে স্ক্যাল্প ও চুলে লাগাতে হবে যাতে এটি চুলের গোড়ায় গোড়ায় পৌঁছায়।
২) স্টিমিং :
এবার হালকা গরম জলে একখানি তোয়ালে ভিজিয়ে তা চেপে জল ঝড়িয়ে নেওয়ার পর সেটি দিয়ে মাথা ভালো করে মুড়ে বেঁধে নিতে হবে। এভাবে রাখতে হবে প্রায় ২০ মিনিট।
৩) শ্যাম্পু :
এখন শ্যাম্পুর পালা। সরাসরি শ্যাম্পু ব্যবহারের পরিবর্তে একটি পাত্রে সামান্য গরম জল নিয়ে তাতে শ্যাম্পু গুলিয়ে অর্থাৎ dilute করে নিয়ে মাথায় দিতে পারলে ভালো হয়। তবে খেয়াল রাখতে হবে জল যেন খুব বেশি গরম না থাকে। এতে চুল পড়ার আশঙ্কা থাকে।
৪) কন্ডিশনার :
শ্যাম্পুর পর কন্ডিশনার লাগানো বাধ্যতামূলক। এর ফলে চুল
নরম ও মোলায়েম থাকে। তবে কন্ডিশনার কিন্তু চুলের গোড়ায় একদম লাগানো যাবে না।
কন্ডিশনার ভারি হয়। চুলের গোড়ায় জমে গেলে খুশকির প্রকোপ দেখা দিতে পারে এবং ফলস্বরূপ
চুল উঠতে পারে।
৫) হেয়ার মাস্ক :
বাজার থেকে কেনা অথবা ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করা যায়। দোকান থেকে কিনলে সেটিতে উপস্থিত উপাদানগুলি দেখে নিতে হবে। মাস্ক প্রয়োগ করলে তা করতে হবে শ্যাম্পু করার আগে। ঘরোয়াভাবে প্রস্তুত কয়েকটি হেয়ার মাস্কের পদ্ধতি উল্লেখ করা হলো।
◾টক দইয়ের মাস্ক :
কলা, মধু, টক দই ও অলিভ অয়েল একসাথে মিশিয়ে চুলে
লাগিয়ে রাখতে হবে। তারপর ২০-৩০ মিনিট বাদে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
◾ডিম ও তেলের মাস্ক :
চুলের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী ১টি অথবা ২টি ডিমের সাদা অংশের
সঙ্গে নারকেল তেল ভালো করে মিশিয়ে চুলে লাগিয়ে রাখতে হবে। মাথায় একটি হেয়ার
ক্যাপ পরে নিতে হবে। ২০-৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
◾কলার মাস্ক :
পাকা কলা চটকে তার সাথে ডিম, অলিভ অয়েল, মধু ও দুধ
একসাথে ভালো করে মিশিয়ে মাথায় লাগিয়ে রেখে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে।
হেয়ার মাস্ক প্রয়োগ করে শ্যাম্পু করার পর যথারীতি কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে। সম্পূর্ণ পদ্ধতিটির পর চুল এতো নরম আর চকচকে হয়ে যাবে যে মুগ্ধতার কোনো অবকাশ থাকবে না।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন