দরজায় কড়া নড়ল। ঠক ঠক ঠক! নীল চমকে উঠে তাকাল দরজার দিকে।
- এত রাতে কে আসবে!
আজকেই এই নতুন মেস বাড়িটাতে সে উঠেছে। খোলা কি ঠিক হবে? দোনোমনা করতে করতে সে উঠল। দরজাটা খুলতেই পৌষের একরাশ হিমেল হাওয়া ঘরের ভিতর
ঢুকল। কেউ নেই। ও কি ভুল শুনল? হতে পারে।
ঘরে ঢুকে দরজা লাগাতে যাবে, হঠাৎ ওর মনে হলো ঘরে কেউ
আছে। ওর ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় জানান দিচ্ছে। ও খাটের তলায় উঁকি দিল। না কিছু নেই। কে
থাকবে! ধূর কী আবোল তাবোল ভাবছে! ও চোখ
বন্ধ করে ঘুমানোর চেষ্টা করল। আর তখনই মনে হল ওর শরীরটা হালকা লাগছে। খুব হালকা।
ওজন যেন ধীরে ধীরে কমছে। এখন মনে হচ্ছে শরীর বলে কিছু নেই। কী হচ্ছে! এমন মনে হচ্ছে কেন? নীল উঠে বসল।
হাতড়ে হাতড়ে লাইটটা জ্বালালো। একি! যে জামাকাপড়গুলো এতক্ষণ ও
পরেছিল ওগুলো বিছানায় পড়ে কেন? ও তো খোলেনি। ওর ঠান্ডাও লাগছে না। এখন তবে সে কী পরে আছে? নিজের শরীরের দিকে তাকাতেই ওর চক্ষু চড়কগাছ! শরীর বলে কিছু নেই। পুরো শরীর এক
লহমায় যেন অদৃশ্য হয়ে গেছে। আর ঠিক সে মুহূর্তে সে অনুভব করলো তারই মতো আরেক
হাওয়া হাট করে দরজা খুলে বেরিয়ে গেল। যাওয়ার আগে স্পষ্ট শুনতে পেল, “পরের জনের দায়িত্ব তোমার!”
পরেরদিন মেসের মালিক ২২৭ নম্বর ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে ভুরু কোঁচকালো।
প্রত্যেকবারের মতো এবারও ওই ঘরের নতুন আবাসিক নিজের সব জিনিসপত্র, এমনকি পরনের জামাকাপড়গুলো রেখেই কোথায় হাওয়া হয়ে গেছে। ওই
ঘর থেকে জিনিসপত্র সরিয়ে আবার 'টু লেট' লাগাতে হবে। আর ঠিক সে মুহূর্তে ঘরের হাওয়াটা আকুলি বিকুলি
করে উঠলো, “পরেরজনকে হাওয়া করলেই আমার মুক্তি!”
একেবারে ভিন্নস্বাদের অলৌকিক গল্প। খুব ভালো লাগল অভিনব বিষয় ভাবনার জন্য।
উত্তরমুছুনএকটি মন্তব্য পোস্ট করুন