স্বৈরাচারিণী - বিপাশা সমাদ্দার


 
গাছটা দিন দিন ডালপালা বিস্তৃত করে চলেছে

নিজের খেয়াল খুশি মতো ; অথবা,

ঠিক স্বৈরাচারিণীর মতো।

হাওয়ায় ওর পাতারা উড়ছে -

এলোমেলো ভাবে ;

যেন তরুণী নারী ভেসে বেড়াচ্ছে -

আপন উল্লাসে মত্ত হয়ে , আনন্দে বিভোর হয়ে।

অথচ পর্যাপ্ত ফলে ফুলে ছায়ায়  তৃপ্তি দিতে ওর জুড়ি মেলা ভার ;

চাহিদার থেকে অনেক -

অনেক বেশি দেয়।

ঝুড়ি উপচে পড়ে ওর ফলে ফুলে ;

ওর ছায়াতে প্রাণ জুড়োয় , ওর বাতাস বাঁচিয়ে রাখে।

 -"তা বলে ওর অমনধারা বেয়াড়াপনা ডালপালা

সহ্য হয় না কি!

-ইচ্ছে করে ডালপালা গুলো ধরে দিই কেটে"

ভাবে বসে বাড়ির কর্তা আপনমনে ।

 

নারীও ঠিক ওই গাছের মতো -

কর্তব্য পালন করে যাবে প্রয়োজন মতো ;

অথচ স্বাধীনতাহীন ভাবে।

সে নিজের মতো চললে ,

হাত পা ছড়িয়ে বাঁচলে , আনন্দে বাঁচলে -

বাঁধভাঙা উল্লাসে বাঁচলে -

 স্বৈরাচারিণীর তকমা জুটবে যে অক্লেশে ।

তখন তার ডানা ছাঁটতে ব্যস্ত হবে সমাজ।

 

অথচ নারী আর গাছ -

দু'জনেরই শেকড় গভীরে প্রোথিত ;

ওপড়ানো সহজ নয়।

নারী কিম্বা গাছ সেও তো

দশপ্রহরণধারিণী , স্বৈরাচারিণী নয়।

সেও বাঁচতে চায় নিজের মতো করে।

দশ হাতে বছরের পর বছর ধরে

 আশেপাশের মানুষজনকে রক্ষা করে।

 

তাই একবার কেবল একবার ভাবতে হবে

নারীহীন জীবন অথবা গাছহীন জীবন।

তবুও নারী কিম্বা গাছ কতো সাধারণ -

কতো অনায়াসে তাকে ছেঁটে দেওয়া যায়,

কখনো জীবন থেকে কখনো শেকড় থেকে -

তারপর ; ধূ ধূ মরুভূমি , রুক্ষ চারিপাশ

কখনো জীবন , কখনো পরিবেশ

 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন